OrdinaryITPostAd

কুরবানীর সাথে আকিকা দেওয়ার নিয়ম কি বিস্তারিত সকল তথ্য জেনে নিন

কুরবানীর সাথে আকিকা দেওয়ার নিয়ম এই বিষয়টি সম্পর্কে বিভ্রান্তের মধ্যে পড়ে যায় অনেকেই  আপনিও যদি এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেল পোস্টটি আপনার জন্য।

অনেকেই আছেন যারা জেনে বা না জেনে কোরবানির দিনে আকিকা করে থাকেন। আজকের আর্টিকেল পোস্টটিতে মূলত কুরবানীর সাথে আকিকা দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হয়েছে। তাই এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পুরো আর্টিকেল পোস্টটি পড়ে নিবেন। 

পোস্ট সূচীপত্রঃ কুরবানীর সাথে আকিকা দেওয়ার নিয়ম কি 

কুরবানীর সাথে আকিকা দেওয়ার নিয়ম

আপনি যদি কুরবানীর সাথে আকিকা দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আজকের এই আর্টিকেল পোস্টটি আপনার জন্য। চলুন তাহলে আর কথা না বাড়িয়ে কুরবানীর সাথে আকিকা দেয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক। কুরবানি আর আকিকা এই দুটি ভিন্ন ভিন্ন ইবাদত। কুরবানী বছরের নির্দিষ্ট সময় করা হয়ে থাকে। অপরদিকে আকিকা সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সপ্তম দিনে করা হয়ে থাকে।

অতএব আকিকা সন্তান ভূমিষ্ঠ কখন হলো এই বিষয়টার ওপর নির্ভরশীল। কুরবানীর সঙ্গে আকিকা দেওয়া যায় তবে এমনটা করা উত্তম নয়। যেহেতু কোরবানি এবং আকিকা দুটি ভিন্ন ইবাদত তাহলে চলুন এবার জেনে নি আকিকা এবং কুরবানীর মধ্যে পার্থক্যঃ 

কুরবানীঃ কুরবানী জিলহজ মাসের ১০ তারিখে করা হয়ে থাকে। বছরের একটি নির্ধারিত ও নির্দিষ্ট সময়ে কুরবানী করা হয়। কুরবানির মূল লক্ষ্য হলো আল্লাহতালার সন্তুষ্টি । সাধারণত কুরবানী ঈদের দিন থেকে ঈদের তৃতীয় দিন পর্যন্ত করা হয়ে থাকে। একজন সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য কোরবানি ফরজ করা হয়েছে। গৃহপালিত পশু দ্বারা কুরবানী করা সুন্নাহ ।

আকিকাঃ সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর সন্তানের মঙ্গল কামনায় শুকরিয়া স্বরূপ আকিকা করা হয়ে থাকে। আকিকা সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সপ্তম দিনে করা হয়ে থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে বিশেষ কোনো কারণবশত সপ্তম দিনে আকিকা করা সম্ভব না হলে দশমদিনেও করা হয়ে।  আর যদি অসামর্থ্যবান ব্যক্তি হয়ে থাকে তাহলে তার জন্য আকিকা যখন তার সামর্থে হবে তখনই করা যাবে।গৃহ পালিত পশুদিয়ে আকিকা করা হয়ে থাকে। 

কোরবানির সুন্নাহ

একজন মুসলিম ও সামর্থ্যবান ব্যক্তির কুরবানী করা ফরজ। ইসলামিক শরিয়াত মোতাবেক কোরবানি জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখে উদযাপিত হয়ে থাকে। এটি ঈদুল আযহা নামে পরিচিত।মুসলিম ব্যক্তিগণ আল্লাহ সন্তুষ্টি লাভের আশায় ঈদুল আযহার দিনে গৃহপালিত পশু কুরবানী করে থাকে। তবে হ্যাঁ কোরবানির বিশেষ কিছু সুন্নাহ রয়েছে। তাহলে চলুন জেনে নিই কুরবানীর সুন্নাহ গুলো কি কি-

১। ঈদুল আযহার দিনে কুরবানী করা

২। গৃহপালিত পশু দ্বারা কুরবানী করা

৩। কুরবানীর পশু নিখুঁত হতে হবে

৪। কোরবানির পশু যেন সুস্থ হয়

৫। কুরবানীর পশুটি যেন কোরবানির উপযুক্ত বয়সের হয়

৬। নির্ধারিত ও নির্দিষ্ট সময়ে কুরবানী করা সুন্নাহ

৭। কুরবানীর গোশত সঠিকভাবে বন্টন করাও সুন্নাহ

ছেলে সন্তানের আকিকার নিয়ম 

কুরবানির সাথে আকিকা দেওয়ার নিয়ম জানার পাশাপাশি ছেলে সন্তানের আকিকার নিয়ম জেনে নিন। ইসলামের শরীয়ত মোতাবেক ছেলে সন্তানের আকিকার নির্দিষ্ট বিধান রয়েছে। ছেলে সন্তান হলে দুটি ছাগল দিয়ে আকিকা করতে হয়। ছেলে সন্তান হোক কিংবা মেয়ে সন্তান হোক আকিকা সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সপ্তম দিনে করায় উত্তম। একজন সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য আকিকা সপ্তম দিনে করায় সুন্নত। ইচ্ছাকৃতভাবে অবিলম্বে আকিকা করা উত্তম নয়।  

মেয়ে সন্তানের আকিকার নিয়ম

ইসলামের বিধান অনুসারে মেয়ে সন্তানের জন্য আকিকা করতে হবে একটি ছাগল দিয়ে। অনেকে আছেন যারা মেয়ে সন্তানের জন্য আকিকার গুরুত্বপূর্ণ দিয়ে থাকেনা।  মেয়ে বলে অবহেলা করে। কিন্তু মনে রাখতে হবে আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি ছেলে সন্তান ও মেয়ে সন্তান উভয়। অতএব আকিকা যেহেতু ইসলামের বিধান অনুসারে করার নিয়ম রয়েছে। তো সে ক্ষেত্রে ছেলে সন্তান বা মেয়ে সন্তানের উভয়ের ক্ষেত্রে সমান গুরুত্ব দিয়ে আকিকা করা উচিত। 

সামর্থ্য থাকা সত্বেও আকিকা বিলম্বে করা একদমই উচিত নয়। এবং ছেলেমেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রে  গুরুত্ব সহকারে আকিকা করা উত্তম। তাই মেয়ে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সপ্তম দিন শেষে একটি ছাগল দিয়ে আকিকা করার বিধান রয়েছে। 

আকিকার গোশত বন্টনের নিয়ম

কুরবানীর সাথে আকিকা দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে এবার আলোচনা করব আকিকার গোস্ত বন্টনের নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত। কুরবানির গোস্তের মত আকিকার গোশত নিজে খেতে পারবে এবং অপরকে খাওয়াতে পারবে। এর একটি নির্দিষ্ট বন্টন বিধি রয়েছে।কুরবানীর মত আকিকার গোশত তিন ভাগে বিভক্ত করা হয়ে থাকে। এক ভাগ নিজের জন্য অপর ভাগ ফকির মিসকিন ও গরিব আত্মীয় স্বজনদের জন্য।

বাড়িতে নিজের যে ভাগ রয়েছে সে অংশ থেকে নিজে খেতে পারবে অতএব যার নামে আকিকা সেও খেতে পারবে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু নিজের অংশের মধ্যে কোনোভাবে মিসকিন ও গরিব আত্মীয় স্বজনের অংশ বিশেষ গোস্ত নেয়া যাবে না। নিজের ভাগের অংশটুকু বাদ দিয়ে বাকি দুই অংশই গরিব মিসকিন ফকির গরিব আত্মীয় স্বজনদের মাঝে সমানভাবে বন্টন করে দেওয়াই উত্তম। আশা করছি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।  

আকিকা কতদিন পর্যন্ত করা যায়

অনেকের মনে একটা প্রশ্ন এসে থাকে যে আকিকা কত দিন পর্যন্ত করা যায়। কারণ সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কারো সমর্থ্য নাও থাকতে পারে।  ইসলামের বিধান অনুসারে আকিকা করার একটি নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। যে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সপ্তম দিনশেষে আকিকা করা সুন্নাহ। কিন্তু কোন কোন সময় এই বিষয়টি অন্যথায় করা যেতে পারে। যেমন কোন অসামর্থ্যবান ব্যক্তি সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সপ্তম দিনশেষে আকিকা করতে পারল না। 

তাহলে সে দশম দিনশেষে করতে পারবে। যদি সেটাও না পারে তাহলে সে একুশ তম দিনেও করতে পারবে। যদি তাও সম্ভব না হয় তাহলে তার সামর্থ্য যখন হবে তখন সে আকিকা করে নিতে পারবে। তবে সন্তান ভূমিষ্ঠের সপ্তম দিনে আকিকা করাই উত্তম। 

কি দিয়ে আকিকা করা সুন্নাহ 

অনেকে জানেন আবার অনেকেই জানেন না যে, কি দিয়ে আকিকা করা সুন্নত অনেকের মধ্যে বিভ্রান্ত আসে যে, আকিকা গরু, ছাগল নাকি অন্য কিছু কি দিয়ে করব। তো তাদের উদ্দেশ্যে বলবো ইসলামের বিধান অনুসারে এটা স্পষ্ট যে আকিকার জন্য গৃহপালিত পশু নির্ধারিত এবং গৃহপালিত পশু যেন সুস্থ হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। একটি ছেলে সন্তানের জন্য দুটি ছাগল একটি কন্যা সন্তানের জন্য একটি ছাগল অতএব,

কন্যা সন্তানের জন্য একটি প্রাণের বিনিময়ে একটি প্রাণ আর ছেলে সন্তানের জন্য একটি প্রাণের বিনিময়ে দুইটি প্রাণ দিতে হবে এটা ইসলামে উল্লেখিত। গরু দিয়ে আকিকা করা জায়েজ হলেও ছাগল দিয়ে আকিকা করা উত্তম ছাগলের পরিবর্তে উট দুম্বা ভেড়া দিয়েও আকিকা করা যেতে পারে।  

কুরবানীর দিনে আকিকা করা জায়েজ কিনা

কুরবানীর সাথে আকিকা দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি এবার আলোচনা করব কোরবানির দিনে আকিকার করা জায়েজ কিনা। অনেকের মনে এই প্রশ্নটি আসে যে কোরবানির দিনে আকিকা করা জায়েজ আছে কিনা। তো চলুন তাহলে এবারে স্পষ্টভাবে জেনে নেই যে কোরবানির দিনে আকিকা করা যাবে কিনা। কুরবানী বছরের নির্ধারিত সময় হয়ে থাকলেও আকিকা নির্ধারিত সময়ে হয় না। 

এটি সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সাথে সম্পৃক্ত অতএব, সন্তান যখন জন্ম হবে তার সপ্তম দিন শেষে আকিকা করা উত্তম এখন সন্তান যদি ঈদুল আযহার সপ্তম দিন আগে ভূমিষ্ঠ হয়ে থাকে তাহলে আকিকার বিধান অনুসারে কোরবানির দিনেই আকিকার দেওয়ার সময় সনাক্ত করা হয়। তাহলে এটাই স্পষ্ট যে কোরবানির দিনে আকিকা করা জায়েজ যদি সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সাথে সময়সীমা সম্পৃক্ত থাকে।

অন্যথায় সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়েছে অনেকদিন আগে দুই মাস চার মাস ছয় মাস বছর পার হয়ে গেছে তো এরকম অবস্থায় নিজের ইচ্ছা কৃতভাবে এসে কুরবানীর দিনে আকিকা করা উত্তম নয় যদিও বা জায়েজ রয়েছে।  

আমার শেষ মতামত 

আজকের এই আর্টিকেল পোস্টের আলোচনার মধ্যে কুরবানীর সাথে আকিকা দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি এখন পর্যন্ত এই পোস্টটি না পড়ে থাকেন তাহলে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ আর্টিকেল পোস্টটি পড়ে নিবেন। আশা করছি আজকের এই আর্টিকেল পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনি উপকৃত হবেন এবং আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কার্যকরী হবে। 

নিয়মিতভাবে আমাদের ডিজিটাল মার্কেটিং আইটি এই ওয়েবসাইটটিতে আপডেট তথ্যমূলক আর্টিকেল পোস্ট পাবলিশ করা হয়ে থাকে। তাই এইরকম আরও আপডেট তথ্যমূলক আর্টিকেল পোস্ট পেতে আমাদের ডিজিটাল মার্কেটিং আইটি এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন। আপনার কেমন লেগেছে মন্তব্য করে জানাবেন। এবং এতক্ষণ পর্যন্ত আপনার মূল্যবান সময় দিয়ে আমার এই আর্টিকেল পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজিটাল মার্কেটিং আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্টে রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪