ছেলের আকিকা দেওয়ার নিয়ম কি সঠিক নিয়ম জেনে নিন
ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে আকিকা মুসলিমদের গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত অনুষ্ঠান। তাই আপনি যদি মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে ছেলের আকিকা দেওয়ার নিয়ম কি বিস্তারিত জানা আপনার জন্য খুবই কার্যকরী ও গুরুত্বপূর্ণ।
নবজাতক শিশুর আগমনের আনন্দে শিশুর নিরাপত্তা ও বরকত কামনা করে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। তাই আপনি যদি ছেলের আকিকা দেওয়ার নিয়ম কি জানতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আজকের আর্টিকেল পোস্টটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকরী।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ছেলের আকিকা দেওয়ার নিয়ম কি সঠিক নিয়ম
- ছেলের আকিকা দেওয়ার নিয়ম
- আকিকা কেন দিতে হয়
- আকিকা কখন দিতে হয়
- আকিকা না দিলে কি হয়
- আকিকা কখন সদকা হয়ে যায়
- আকিকার টাকা সদকা করে দিলে কি আকিকা আদায় হবে
- মেয়ে ছাগল দিয়ে কি আকিকা হবে
- কুরবানীর সাথে আকিকা দেওয়ার নিয়ম
- গরু দিয়ে আকিকা দেওয়ার নিয়ম
- আমার শেষ মতামত
ছেলের আকিকা দেওয়ার নিয়ম
ছেলের আকিকা দেওয়ার নিয়ম কি বিস্তারিত জানতে চাইলে আজকের এই আর্টিকেল পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ে নিতে হবে। মুসলিমরা সন্তান জন্মগ্রহণের খুশিতেই সন্তানের মঙ্গল কামনায় আকিকা করে থাকে। ইসলামের বিধান অনুযায়ী সন্তান ছেলে হোক বা মেয়ে হোক আকিকার বিধান রয়েছে। সন্তান ভূমিষ্ঠের পর সাত দিনের মধ্যে আকিকা দেওয়া সুন্নত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই ওয়া সাল্লাম সন্তান জন্মগ্রহণের সপ্তম দিনে আকিকা করেছেন।
যদি কোন কারণে সপ্তম দিনে আকিকা করা সম্ভব না হয়, তাহলে চতুর্দশতম দিনে আকিকা করতে হয়। তবে হ্যাঁ কেউ যদি আকিকা করতে সামর্থ্যহীন হয়ে থাকে তাহলেও কোন ইসলামে বাধা নেই। কিন্তু আসল কথা হলো এই যে, আকিকা দেওয়ার একটি নিয়ম রয়েছে সেটা ছেলে সন্তানের জন্য একরকম নিয়ম। আর মেয়ে সন্তানের জন্য আরেক রকম নিয়ম।চলুন তাহলে এবার জেনে নিই যে ছেলের আকিকা দেওয়ার নিয়ম কি-
১। পশু জবাই করেঃ ছেলে সন্তান অথবা মেয়ে সন্তান সবার জন্যই আকিকা করতে হলে অবশ্যই পশু জবাই করতে হবে। অতএব পশু দিয়ে আকিকা করতে হবে। আকিকার জন্য গৃহপালিত পশু যেমন গরু-ছাগল, মহিষ, উট, দুম্বা।
২। জোড়া পশুঃ সাধারণভাবে মেয়ে সন্তানের জন্য একটি পশু দিয়ে আকিকা করা হয় কিন্তু ছেলে সন্তানের জন্য জোড়া পশু লাগে। অতএব যদি ছাগল হয়ে থাকে তাহলে দুটি ছাগল হতে হবে। ছেলের জন্য দুইটি ছাগল দিয়ে আকিকা করা উত্তম। অপরদিকে মেয়ে সন্তানের জন্য একটি ছাগল বা বকরি আকিকা করা উত্তম। আশা করছি এই বিষয়টি স্পষ্ট ভাবে বুঝতে পেরেছেন।
আকিকা কেন দিতে হয়
ছেলের আকিকা দেওয়ার নিয়ম কি বিস্তারিতভাবে জানতে পেরেছেন এবার জেনে নিন আকিকা কেন দিতে হয়। ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে প্রতিটি মুসলিম ব্যক্তির সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর আকিকা দেওয়া উত্তম। সাধারণত সন্তানের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ও মঙ্গল কামনায় আকীকা করার কথা বলা হয়েছে। সন্তানের মঙ্গল কামনার জন্য গৃহপালিত পশু দিয়ে আকিকা করা উত্তম। প্রত্যেক শিশু তার আকিকার বিনিময়ে বন্ধকস্বরূপ।
আকিকা কখন দিতে হয়
অনেক সময় জেনে বা না জেনে অনেকেই আকিকা করেন না। সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়ে যায় সন্তান বড় হতে থাকে এমন কি বৃদ্ধ হয়ে যায় তারপরও ওই সন্তানের আকিকা করা হয় না। সেক্ষেত্রে আবার অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে যে আকিকা কখন করতে হয়। অনেকেই আকিকা কখন করতে হয় এই বিষয়টি জানার আগ্রহ প্রকাশ করেন। চলুন তাহলে জেনে নিই আকিকা দেওয়ার নির্দিষ্ট সময় কখন-
ইসলামিক বিধান অনুযায়ী সন্তান ভূমিষ্ঠের সাত দিনের মধ্যে আকিকা করার নিয়ম রয়েছে।তবে যদি কোন কারনে কোন ব্যক্তি সাতদিনের মধ্যে আকিকা করতে না পারে বা সামর্থের জন্য অক্ষমতা প্রকাশ করে থাকে তাহলে চতুর্দশ দিনে আকিকা করতে হয়। তাও যদি সম্ভব না হয় তাহলে এক বিংশ দিনে আকিকা করা হয়ে থাকে। আবার যদি তাও সম্ভব না হয় তাহলে যে কোন দিনে আদায় করা যেতে পারে। তবে আকিকা সাত দিনের মধ্যে দেওয়ায় উত্তম।
আকিকা না দিলে কি হয়
আকিকা এক ধরনের সদকা এবং নবীর সুন্নত। প্রত্যেক জন্মগ্রহণকারী নবজাতকের জন্য আকিকা বাধ্যতা মূলক। যদি কোন ব্যক্তি সন্তানের জন্য আকিকা না করে তবে তা মৃত্যু বা এ ধরনের বিপর্যয়ের মুখোমুখি হবে। আকিকা এক ধরনের সদকা এবং নবীর সুন্নত আর নবীর সুন্নত মানা মুসলিমদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সামর্থ্য থাকলে অবশ্যই সন্তান জন্মগ্রহণের সাত দিনের মধ্যে আকিকা করতে হবে।
আকিকা কখন সদকা হয়ে যায়
ছেলের আকিকা দেওয়ার নিয়ম কি এই বিষয়টি জানার পাশাপাশি এবার জেনে নিন আকিকা কখন ছদকা হয়ে যায়। আকিকার মাংস বন্টনের যে একটি নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে সে নিয়মের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ গোশত গরিব মিসকিনদের জন্য। আর গরিব মিসকিনদের এক তৃতীয়আ অংশ গোস্তই হলো সদকা।
আকিকার টাকা সদকা করে দিলে কি আকীকা আদায় হবে
অনেকে আছেন যারা আকিকার টাকা সদকা করে দিলে কি আকিকা আদায় হবে এই বিষয়টি জানার আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন। তো চলুন তাহলে এবার জেনে নেওয়া যাক আকিকা সদকা করে দেওয়া যায় কিনা। আকিকা ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে সুন্নত এবং সন্তানের সুন্দর ও নিরাপদ জীবনের জন্য অপরিহার্য। সন্তানের ভবিষ্যত জীবনের বালা-মুসিবত দূর করতে, সুস্থতা দান করতে দ্বীনদারী উত্তম গুণাবলীর সাথে বেড়ে ওঠার জন্য আকিকার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
সামর্থ্য থাকলে আকিকা থেকে বিরত থাকা উচিত নয়। এবার আসা যাক আসল কথায় আকিকা সন্তানের জন্মের সপ্তম দিনে করা উচিত । আর আকিকা হতে হবে গৃহপালিত পশু দ্বারা কিন্তু যদি আপনি আকিকার জন্য টাকা আপনার পক্ষ থেকে সদকা করে দেন তাহলেও আপনার সন্তানের আকিকা হয়ে যাবে আপনি আকিকার সওয়াবের সাথে সাথে জিহাদের পথে ব্যয় করার সওয়াবও পেয়ে যাবেন। আশা করছি বিষয়টি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন।
মেয়ে ছাগল দিয়ে কি আকিকা হবে
ছেলের আকিকা দেওয়ার নিয়ম কি জানা হয়ে গেলে জেনে নিন মেয়ে ছাগল দিয়ে কি আকিকা হবে কিনা। ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে সন্তান জন্মগ্রহণের পর সন্তানের শুকরিয়া আদায় এবং সন্তানের মঙ্গল কামনায় আকিকা করা হয়ে থাকে। ইসলামে উল্লেখিত রয়েছে যে, মেয়ে ছাগল দিয়ে আকিকা হবে।
কুরবানীর সাথে আকিকা দেওয়ার নিয়ম
কোরবানির সাথে আকিকা দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে এবার আলোচনা করব যদি না জেনে থাকেন তাহলে জেনে নিন। একই পশুতে কোরবানির সঙ্গে আকিকা দেওয়া যায় তবে এরকম না করাই উত্তম। কিন্তু বর্তমান সময়ে অধিকাংশ মানুষই কোরবানির দিনে একই সাথে আকিকা করছে। আমরা মুসলিম ব্যক্তি হিসেবে চেষ্টা করব সন্তানের আকিকা সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার ৭ দিনে দেওয়ার এবং কোরবানির দিনে না দেওয়া।
গরু দিয়ে আকিকা দেওয়ার নিয়ম
অনেকে আছেন যারা জেনে বা না জেনে গরু দিয়ে আকিকা করে থাকেন। তারা জানেন না যে আসলে গরু দিয়ে কয়টা আকিকা করা যায়। যদি আপনিও এই একই বিষয় জানার আগ্রহ প্রকাশ করেন তাহলে বলবো যে গরু দিয়ে সন্তানের একটা আকিকা করা যায়। কারণ আকিকা হলো একটি প্রাণের বিনিময়ে আরও একটি প্রাণ দেওয়া। সেই ক্ষেত্রে একটি গরু দিয়ে আপনি অনেকগুলো আকিকা করবেন সেটা হবে না। একটা গরু দিয়ে একটি আকিকা করতে হবে।
আমার শেষ মতামত
ছেলের আকিকা দেওয়ার নিয়ম কি এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন আজকের আর্টিকেল পোস্টের আলোচনার মধ্যে। আশা করছি আজকের আর্টিকেল পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে আপনি উপকৃত হতে পারবেন। তাই এখন পর্যন্ত যদি আপনার এই আর্টিকেল পোস্টটি পড়া না হয়ে থাকে তাহলে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ আর্টিকেল পোস্ট পড়ে নিবেন।
আমাদের ডিজিটাল মার্কেটিং আইটি এই ওয়েবসাইটটিতে নিয়মিতভাবে আপডেট তথ্যমূলক আর্টিকেল পোস্ট পাবলিশ করা হয়ে থাকে। তাই এইরকম আরো আপডেটতথ্যমূলক আর্টিকেল পোস্ট পেতে নিয়মিতভাবে আমাদের ডিজিটাল মার্কেটিং আইটি এই ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।
সবশেষে বলব, আজকের আর্টিকেল পোস্ট আপনার কেমন লেগেছে মন্তব্য করে জানাবেন এবং এতক্ষণ পর্যন্ত ধৈর্য সহকারে আর্টিকেল পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
ডিজিটাল মার্কেটিং আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্টে রিভিউ করা হয়।
comment url